ঢাকা,শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

অবাধে বালু বিক্রি, হুমকির মুখে পরিবেশ

balu bebsaমহেশখালী প্রতিনিধি :::

পরিবেশ আইন অমান্য করে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় ১০টি স্থানে পাহাড় থেকে নেমে আসা বালু বিক্রি করছে একশ্রেণির অসাধু লোক। এ কারণে সরকার যেমন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বালু বিক্রি বন্ধ করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগকে অবহিত করেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
গত সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ধলঘাটপাড়া, কালামারছড়া ইউনিয়নের চালিয়াতলী ও উত্তর নলবিলা এলাকার লোকজন পাহাড়ের ছড়ার বালু অবাধে উত্তোলন করছে। পরে এসব বালু প্রতি ট্রাকে পাঁচ শ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
শাপলাপুর ইউনিয়নের ষাইটমারা এলাকার বাসিন্দা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে অবাধে পাহাড়ের বালু উত্তোলন করে তা প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন। বালু পরিবহন কাজে নিয়োজিত ট্রাকচালক মোহাম্মদ মোস্তাক বলেন, স্থানীয় বালু বিক্রেতার সঙ্গে চুক্তিতে ট্রাকে বালু ভর্তি করে সরবরাহ করছেন। প্রতি ট্রাক বালু পরিবহনের জন্য আট শ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছেন। পরিবেশের ক্ষতি হলেও তাঁর করার কিছুই নেই।
কালারমারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান মির কাসেম চৌধুরী বলেন, সরকারিভাবে ইজারা ছাড়া পাহাড় বা ছড়ার বালু বেচাকেনা করার কোনো নিয়ম নেই। এরপরও বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশের ছড়া থেকে পাহাড়ের বালু উত্তোলন করে স্থানীয় লোকজন বাইরে বিক্রি করছে।
উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোহাম্মদ আব্দুর রহমান বলেন, ‘কালারমারছড়া ইউনিয়নের চালিয়াতলি এলাকায় গিয়ে বালুভর্তি দুটি ট্রাক আটক করি আমরা। পরে বালু ফেলে ট্রাক নিয়ে বালু বিক্রেতারা পালিয়ে যায়। তাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অবহিত করা হয়েছে।’
বন বিভাগের মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাশেম ভূঁইয়া বলেন, ‘বিচ্ছিন্নভাবে চালিয়াতলিসহ কয়েকটি এলাকায় পাহাড়ের ছড়ার বালু বিক্রি করছে বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে শুনেছি। তাই তদন্ত করেই অচিরেই বালু বিক্রি বন্ধ করার জন্য অভিযান চালানো হবে।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ আইনের ১৯৯৫ সালের (সংশোধিত ২০১০) ১ নম্বর আইনের ৬ এর খ ধারা মতে পাহাড়ের বালু বেচাকেনা করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই এ ব্যাপারে এলাকায় খোঁজখবর নেওয়া হবে।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, ‘অবাধে বালু বিক্রি করার বিষয়ে কেউ আমাকে লিখিত অভিযোগ করেননি। এরপরও পুলিশ অভিযান চালিয়ে চালিয়াতলি এলাকা থেকে বালু পরিবহনের অভিযোগে একটি ট্রাক আটক করে।’
জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, ইতিমধ্যে বালুভর্তি একটি ট্রাক জব্দ করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পরিচালনা করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বালু বিক্রি বন্ধ করার জন্য এলাকায় আবারও অভিযান পরিচালনা করা হবে।

পাঠকের মতামত: